বাক্‌ ১৪৫ ।। সোনালী চক্রবর্তী

 

পাখি, ঘুড়ি আর সুতো সুতো মানুষ

 

 

ঘুড়ির গান 

 

একটা মেয়ে ভালোবাসলে পাড়ে বসে আয়ু ফুরিয়ে দেয়। যার নাম কুবের সে ঘরের দায়ে রোজ জাল ফেলে। নিজেকে পাখি জেনে বেচবে বলে কোন কোন পাগল বাজারে পৌঁছে দেখে হাজার হাজার মৃত চাঁদ আঁশটে জলে ডুবে খাবি খায়। ঘুড়িটা উড়তে উড়তে ভাবে, আহা কী সরল মাটির গান, বঁটি দিয়ে কিছু জ্যোৎস্না কুচিয়ে দেওয়া গেলে তিনটে মানুষেরই অন্ধকার নেভানো যায়। 

 

 

 

খাঁচার পাখি

 

 

সেদিন একটা পাখির থেকে একটা মানুষ বিয়োগ দিতেই উড়ে গেল একটা ঘুড়ি। এক ফালি রোদ্দুর মাখতে গিয়ে তার বিষম হাহাকার। কত জ্যোৎস্নার শব গলে গেলে এমন আলো আসে? ঘুড়িটা কখনো জানবে না শিকলের রং ঘন হতে হতে রক্ত হয়ে গেলে যে কোন মানুষ পাখির মাংস কিনে আকাশ দেখতে দেখতে বাড়ি ফেরে।

 

 

মানুষী চক্র

 

মৃত মাছের আঁশে কতটা রূপো জমে থাকে, নূপুরের কাঁটা বাছতে গিয়ে দেখা হয় না প্রজাপতিরঙা মথটির। চাদর থেকে প্রতি চাঁদে ভাঙা ডানার গুঁড়ো ঝেড়ে ফেলে দানা ঠোকরানো বোবা ঘুড়ি। পায়রা ভেজা আলো লুকোতে লুকোতে বেণীর ফিতে হারিয়ে ফেলা সময় এখন অন্ধকার চুঁইয়ে নামা জীর্ণ গুহাচিত্রের। আর ভাঙা কার্নিশের গর্তে ঝিমোনো সাদা অন্ধ বাহনটি পুনর্জন্মে খোঁজে দরবেশ দরিয়ায় উড়াল দেওয়া অলক্ষ্মী বাজপাখি।

 

23 comments:

  1. আয়ু ফুরিয়ে দেবোই তো... তবুও বলবো আআয়ুস্মানেরা চিরঞ্জীবী হোক ❤

    ReplyDelete
  2. তিনটি কবিতাই ভালো লাগল।
    মানুষী চক্র বেশি ভালো লাগল।
    নমস্কার নিন কবি।

    ReplyDelete
  3. অসম্ভব ভালো ভালো ভালো... কত কত নতুন শব্দছবি আহা... মন ভরে গেল।

    ReplyDelete
  4. অসম্ভব ভালো ভালো ভালো... কত কত নতুন শব্দছবি আহা... মন ভরে গেল।

    ReplyDelete
  5. খুবই ভালো লাগল সোনালী।

    ReplyDelete
  6. "সেদিন একটা পাখির থেকে একটা মানুষ বিয়োগ দিতেই উড়ে গেল একটা ঘুড়ি।"
    "ঘুড়িটা উড়তে উড়তে ভাবে, আহা কী সরল মাটির গান, বঁটি দিয়ে কিছু জ্যোৎস্না কুচিয়ে দেওয়া গেলে তিনটে মানুষেরই অন্ধকার নেভানো যায়। "
    "আর ভাঙা কার্নিশের গর্তে ঝিমোনো সাদা অন্ধ বাহনটি পুনর্জন্মে খোঁজে দরবেশ দরিয়ায় উড়াল দেওয়া অলক্ষ্মী বাজপাখি।'

    bheeshon bhaalo laaglo :)

    ei linegulo tule niye por por rakhlam. swotontro kobitar moto.
    ki bishaad-medur, ki mayamoy... megher aarhale chaand, othoba haanser buk-er motoi.

    ReplyDelete
    Replies
    1. এই পাঠ প্রতিক্রিয়া পাওয়ার লোভে হাজার হাজার বছর একটা লাইন লেখার আশায় কাটিয়ে দেওয়া যায়

      Delete
  7. প্রতিটি কবিতাই অনবদ্য লাগলো। আমার সবথেকে ভালো লেগেছে 'ঘুড়ির গান'। ভাবনা আর ভাষা কুরে কুরে কতখানি গভীরে গেলে নির্মাণ চুপিচুপি সৃষ্টি হয়ে ওঠে...!! অসাধারণ ম্যাডাম...

    ReplyDelete
  8. "...ঘুড়িটা কখনো জানবে না শিকলের রং ঘন হতে হতে রক্ত হয়ে গেলে যে কোন মানুষ পাখির মাংস কিনে আকাশ দেখতে দেখতে বাড়ি ফেরে।"
    প্রতিটা কবিতা খুব ভালো লাগলো ।

    ReplyDelete
  9. উড়ে গেল একটা ঘুড়ি...
    অনবদ্য!

    ReplyDelete
  10. তিনটি কবিতার যোগসূত্র হল অদ্ভুত বিচ্ছিন্নতা বোধ। হয়তো ওই টানেই আবার একসাথে। ভালো লাগল

    ReplyDelete
  11. মৃত মাছ ও ঘুড়ি..
    সোনালী...

    ReplyDelete