বাক্‌ ১৪৫ ।। সাজ্জাদ সাঈফ

 

তোমার ফটোর হাসি

 

হয়তো ফুলের দিকে ছিলো কিছুদিন, আবহাওয়া কোমল;

হয়তো খোঁপাকে লক্ষ্য করে জ্যোৎস্নাও রিঙটোন-

 

তারপর দীর্ঘশ্বাস ফেলে মেঘ থেকে নেমে আসে দিঘী, পিছল সিঁড়ির ধাপ;

 

আকাশকার্নিশ জুড়ে নামতা পাঠের স্মৃতি, ছুঁড়ে দিয়ে বসে আছে গার্লস স্কুল; এর ধারে ট্রেনের ধোঁয়ারা ওড়ে, এর ধার ঘেঁষে তোমার ফটোর হাসি ততোধিক গান, তদ্রূপ গুঞ্জন তুলে শীতের সরোদস্নেহে ফুটে থাকে পথচারি পারাপার।

 

এই ঘোলা শহরের গায়ে প্রেম যেনো স্মৃতির ঠোকর, ততোধিক বিষণ্ণতাকে চিনি, ঘুমের অসুখ চিনি, সন্তের সোনালি ভোরে শীতাতপে ডুবে থাকা মসজিদ চিনি আর তার বাহিরে ঘুমানো জড়সড় বাস্তুহারার চোখেরা জানে নাকি ক্ষুধা চেপে রেখে ভূগর্ভ জমাচ্ছে লাশ, যুদ্ধ-ক্রুদ্ধ ম্যাপ?

 

হয়তো তুমিও ফুল

কিছু দিন আলো-হাওয়া, আবহাওয়া ভালো;

কিছু দিন পরিচিত সব এলোমেলো!'

 

 

 

 

 

 

চোখেরা জোনাক হলে

 

অবশেষে ভ্রমণ গিয়েছে হেঁটে-

তুমি আমি ছায়া নিয়ে, ভূবনডাঙার ধারে রয়ে গেছি, সয়ে গেছি মেঘ;

স্বপ্নেরই প্রয়োজনে, আমাদের কাতরতা নিয়ে গেছে;

ক্ষয়ে গেছে পাতা, চোখেরা জোনাক হলে

স্বপ্নের সড়কে হাঁটি, বনফুলে মিঠা রোদ আঁকি!


আমাদের কাতরতা আঁকা

পৃথিবীর অবাক নয়নে লাল!

এই মিঠা রোদ, পানা পুকুরের চাঁদ, ভালোবাসো তুমি?

এতসব হাওয়াই মিঠাইওয়ালা, হাড়বুড়া দখিনা বাতাস

ঠেলেঠুলে ঢুকে যাচ্ছে গেঁয়ো পথে, এতসব খাঁচাঅলা এসে

পাখিদের গানে কান পাতে,  শোনে উড়ালের তাড়া!

 

কিছুদূর হেঁটে মেঘ-পাঠশালা, কিছু দূরে সন্নিবদ্ধ প্রেম

উজান থামিয়ে বাঁকে, উঁকি দেয় নদী;


এই প্রেম তুমি স্বপ্নে চেয়েছিলে?

এই গ্রাম? নিথুয়া ভিটার ধুলি?

এর গায়ে নাই ভূকম্পনের তাড়া?

এই জরা-খরা ও মূর্ছিত ইতিহাসে

কিসের গৌরব নিয়ে, একলা দাঁড়াবে তুমি?

 

 

 

 

 

জনজীবন

 

অন্ধকার এক সাম্রাজ্যের নাম, বেঘোর, ক্রমে বৈরি;

গ্রীষ্মের ছুটিতে ব্যাবিলন শোভা পায়

চিন্তায়

 

যে রকম বাজ পড়ে

বিস্মৃত গানের কাছে কম্পমান অক্ষর

খুলে ফেলে হেডফোন

 

শরীরে আগুনরক্ত

দূর থেকে পিশাচের তাড়া খায়, সাঁতরায়;

ঘাড় তুলে দেখে নেয় বিক্রম, আর শত শত

উচ্চাভিলাষের নিচে চাপা পড়ে থেঁতলে যাচ্ছে

জনজীবন!

 

আমাদের প্রত্যুত্তরজন্ম

প্রকাশ্য তুষের ওপর বারুদগন্ধে ভেজা

 

এমন দুপুরে গাঙপাড়ে

ঢেলা পেয়ে মাথা রেখে

বিশ্রাম নেয় সাপ!

 

 

 

চেনা পাখি

 

বিষাদে কাঁকন বাজে, আরো কত যে বিষন্ন হয় মন

এখানে নিরব দিঘী, বুকে খরস্রোত, স্মৃতির মাতম;

এভাবে সন্ধ্যাও যায়, নিমগোধূলির ধূসর পাড়ায়

আর কি যে মাতম ওড়ে, প্রেম চিরদিন বিরহ বাড়ায়!

 

হৃদয়ে নকশী কাটে, চূর্ণ মেঘেরা চিরল হেসে

সে হাসির নাম নাকি প্রেম, কাতরতা কারা ভালোবাসে?

আমাদের ছেড়ে গেছে যা', আগুনের শীর্ণকায় ধ্বনি

চেনা পাখি, উড়ে ফুঁড়ে গেছে, চিঠির ঠিকানাখানি!

 

প্রিয়, যেই নীল বিষে সাপও আহত দেখো গুলতি ছুড়েছি তার চাকে।

অভিনব নই, কিছুটা শ্যামলা ত্বক, বাস থেকে নেমে আসি মেঘে ঢাকা চোখে।

 

No comments:

Post a Comment