বাক্‌ ১৪৫ ।। সৌর শাইন

 

জৈবিকতার এক অচেনা অধ্যায়

 

রেডিয়ো শূন্য, জিরো পয়েন্ট জিরো এফএমের পক্ষ থেকে সবাইকে জানাচ্ছি শুভেচ্ছা। শ্রোতাবন্ধুরা আমি কথাবন্ধু সৌর আছি আপনাদের সাথে, আর শুরু করছি আপনাদের অধীর আগ্রহের প্রিয় অনুষ্ঠানপ্রেমের গল্প আজকে আমাদের অনুষ্ঠানে উপস্থিত আছেন দেশের প্রখ্যাত বিজ্ঞানী দম্পতি প্রফেসর কৌশিক হাসান . আবিদা চট্টোপাধ্যায়। আমরা শুনব তাঁদের প্রেমের গল্প প্রেম নিয়ে গড়ে উঠা জীবনের গল্প। শুধু প্রেমের গল্পই নয়, আজ আমরা হয়তো পরিচিত হব জৈবিকতার এক অচেনা অধ্যায়ের সাথে। যার দরুণ আজকে অনুষ্ঠানটি নিঃসন্দেহে জমজমাট হতে চলেছে এবং অন্য আট-দশটা প্রেমের গল্প থেকে গল্প একেবারেই আলাদা। শ্রোতাদের এখানে ইঙ্গিত দিয়ে রাখি, সেক্স মানুষের জীবনে একটি অপরিহার্য অংশ, এটা ছাড়া আমাদের জীবনযাপন সম্ভব নয়। সাধারণত আমরা ফিজিক্যাল সেক্সের সাথে পরিচিত কিন্তু এর বাইরেও সেক্সের নানা প্রকারভেদ রয়েছে। তেমনি একটি আমি উচ্চারণ করতে চাই, সেটা হল সাইকোলজিক্যাল সেক্স। আজকের আয়োজনে প্রসঙ্গটা ঘুরেফিরে বারবার আসবে, অ্যাডাল্ট ইস্যুটা এড়িয়ে যাবার উপায় না। যারা বিষয়গুলোকে নেগেটিভলি নেন, তাদের বলছি, যদি ভাল না লাগে, বুঝতে না পারেন তবে চুপচাপ সরে যান, আমাদের ফেসবুক পেইজে নোংরা গালি ছড়াবেন না। কারণ, এটা ভাল মনের মানুষদের কষ্ট দেয়। তো মূল অনুষ্ঠানে যাওয়া যাক, অনেক কথা, আড্ডা গল্পে আমাদের অনুষ্ঠান চলবে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত। অনুষ্ঠানের শেষ প্রান্তে থাকছে আপনাদের ফোনকল প্রশ্ন মতামতের আসর। ফোনকলে যুক্ত হতে আমাদের রেডিয়ো শূন্য ফেসবুক পেইজে দেওয়া নির্দেশনা মেনে যোগাযোগ করুন। গল্পে গল্পে কাটবে পুরোটা সময়, নেই কোনো বিরতি, নেই কোনো বিপত্তি, শুধুই গল্প। ততক্ষণ আমাদের সাথেই থাকুন যাবেন না কোত্থাও। সাথে রাখুন রেডিয়ো শূন্য, জিরো পয়েন্ট জিরো এফএম।

          —কৌশিক ভাই আপনাকে দিয়েই শুরু করছি, প্রেমটা কীভাবে শুরু হয়েছিল?

—এই প্রশ্নের উত্তর আমরা দুজনেই একসাথে দিতে চাই। কারণ ঘটনাটা তো দুজন ঘটিত।

—সিওর, আবিদা আপু, শুরু করুন সেই প্রথম মুহূর্তের গল্পটা।

(হেসে) আসলে ওটা তেমন আহামরি কিছু নয়, কারণ অন্য সবার প্রেমের মতো কেউ কাউকে একপলকে দেখে আকৃষ্ট হইনি। কৌশিককে আমি সম্ভবত আগেও দেখেছি ভার্সিটির লাইব্রেরিতে, তবে মুখ চিনে রাখার মতো বিশেষ কোনো পরিচয় ছিল না। আমি পড়তাম তড়িৎ প্রকৌশল বিজ্ঞানে, কৌশিক পড়ত ফলিত পদার্থবিজ্ঞানে। যতদূর মনে পড়ে ওকে দু’-একবার লাইব্রেরিতে চুপচাপ বই পড়তে দেখেছি। আমিও অবশ্য চুপচাপ ধরনেরই, মোটেও মিশুক নই। হঠাৎ একদিন লাইব্রেরিতে দেখতে পাই নীল টি-শার্ট পরা একটা ছেলেরিলেটিভিটি, দ্য স্পেশাল অ্যান্ড দ্য জেনারেল থিয়োরিবইটা পড়ছে, মজার ব্যপার হল আমিও তখন এই বইটাই পড়ছিলাম। আমার ভেতরে খুব কৌতূহল জাগল, বইটা কে পড়ছে, ওর সাথে আমার সরাসরি না হলেও মুখচেনা পরিচয়টুকু থাকা চাই। আর সে উদ্দেশ্যেই ওর সামনের দিকে এগিয়ে যাই, কিন্তু এতটা ঝুঁকে পড়ছিল, আর মাথার চুলের কারণে মুখটাই দেখা যাচ্ছিল না। তো... অনেকক্ষণ ওর টেবিলের সামনে বসে পত্রিকার পাতা উল্টাচ্ছিলাম ওকে একপলক দেখার জন্য। এক সময় ওর মুখটা দেখার চান্স হল, চিনতে পেরে যুদ্ধজয়ের মতো প্রশান্তি পেলাম। দুদিন পর। আমি নিজে থেকেই ওর সাথে কথা বললাম। অ্যালবার্টের রিলেটিভিটি থিয়োরি নিয়ে কিছু প্রশ্ন করলাম। আমাকে দারুণ সব অ্যানসার দিল।

—তখন মনে আছে? আমিও তোমাকে কিছু প্রশ্ন করেছিলাম, যা আমি ঠিক বুঝতাম না। বুঝলে সৌর, আর আবিদা সেগুলোর...

—হ্যাঁ, আমি সেগুলোর অ্যানসার করেছিলাম।

—আমি সে অ্যানসারগুলো পেয়ে সত্যিই আনন্দিত হয়েছিলাম।

—প্রথম গল্পটা এতটুকু পর্যন্তই। পরে কৌশিকের সাথে আবার দেখা হয় বিজ্ঞান বিতর্কে।

—সে গল্পটা আমি বলছি, বিতর্কে সেখানে আমাদের টপিক ছিল কারেন্ট, ভোল্টেজ, রেজিস্ট্যান্সের রিলেশন নির্ণয় সম্পর্কিত, ওহমের সূত্র নিয়ে। সোজা বাংলায় সূত্রটা এমন, স্থির উত্তাপে কোনো পরিবাহীর ভেতর যে পরিমাণ বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়, ওই পরিবাহীর দুপ্রান্তের বিভব পার্থক্যের সমানুপাতিক আর রেজিস্ট্যান্সের ব্যাস্তানুপাতিক। তো আমরা একদল এই সূত্রের অপরিসীম গুরুত্বের পক্ষে, অন্যদল এর বিপক্ষে, মানে ওরা এই সূত্রের গুরুত্বহীনতা সীমাবদ্ধতা উপস্থাপন করে। তো আমি ছিলাম পক্ষে, আবিদা ছিল বিপক্ষ দলে। সেখানে আমাদের তুমুল বিতর্ক হয়। আমি সূত্রের পক্ষে বক্তৃতা দিয়ে, নিজের দলের জন্য যতটা সম্ভব সাফাই গাইছিলাম, বলছিলাম এই সূত্রের হাত ধরেই ইলেক্ট্রিসিটির ইতিহাসে নতুন পথ উন্মোচিত হল, নতুন বিপ্লব হল ওহম সাহেব এই সূত্র তৈরি না করলে আমাদের তড়িৎ বিজ্ঞানের জগতে এতবড় বিপ্লব হত না। আমরা থাকতাম অন্ধকার যুগে ইত্যাদি ইত্যাদি...

—কৌশিকদের বিরুদ্ধে আমরা শক্ত অবস্থান নিয়েছিলাম। বলতেছিলাম, ওহম বেচারার সূত্র কেবল ডিসি কারেন্টের ক্ষেত্রে কাজ করে, আর এসি কারেন্টে তো কোনো কার্যক্ষমতা নেই। অন্যদিকে জটিল সার্কিট সমূহের সমস্যাগুলো এই সূত্রের সাহায্যে সমাধান করা পসিবল না। টেম্পারেচার কন্ট্রোল করেও সিলিকন কার্বাইডে এই সূত্র সঠিক রেজাল্ট দেয় না। সুতরাং আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারি না, ওহমের সূত্র দ্বারা ইলেক্ট্রিসিটির জগতে কোনো বিপ্লব ঘটে গেল। আমার এইসব যুক্তির কারণে বিতর্কে ওদের টিম হেরে যায়। কিন্তু হেরে যাবার পরও কৌশিককে আমি আনন্দিত হতে দেখেছি। বিতর্কের শেষে আমাকে সে অভিনন্দন জানিয়েছে।

—আমিও আমার টিম হেরে গেলেও, ভীষণ আনন্দ পেয়েছি। আবিদার যুক্তিখণ্ডন সূত্রের সীমাবদ্ধতার ব্যাখ্যা আমাকে কতটা আকৃষ্ট করেছে, তা বলে বোঝানো মুশকিল। সেদিন আমি জীবনের যে পরম আনন্দরস পেয়েছিলাম তা এখনও পেয়ে যাচ্ছি। আসলে বলতে গেলে, সেদিন থেকেই আবিদার সাথে আমার দাম্পত্যজীবনের শুরু। আর ওই বিতর্ক ছিল আমার আর ওর প্রথম সঙ্গমমুহূর্ত।

—অনুষ্ঠানের এই পর্যায়ে কয়েকটা এসএমএস পড়ে নিতে চাই। বনানী থেকে অর্পিতা লিখেছেন, বিজ্ঞানের জটিল টপিক বাদ দিয়ে প্রেমের গল্প শোনান প্লিজ’ ঠিক, অর্পিতা, আমিও সেটাই চাই। আচ্ছা, কৌশিক ভাই, বিজ্ঞানের জটিলতা কি বাদ দেওয়া যায় না?

—আসলে আমাদের গল্প শোনাতে বিজ্ঞান আসবেই। সো এটা বাদ দিয়ে গল্প বলা যাবে না। তবে আমরা সায়েন্স থিয়োরির অনেক টপিক অ্যাভয়েড করেই কথা বলব যা প্রাসঙ্গিক তা হয়তো আসবে।

—তারপর কক্সবাজার থেকে সাদি লিখেছেন, ‘জৈবিকতার এক অচেনা অধ্যায়, শিরোনাম শুনেই কেমন রোমাঞ্চ ফিল হচ্চে সৌর ভাই’ সাদি ওটা আসলে শিরোনাম নয়, তবে তোমার এই রোমাঞ্চ কিছুক্ষণ পর উধাও হয়ে যাবে হয়তো, বরং এক চরম কৌতূহলে তুমি স্তব্ধ হয়ে যাবে, যা ভাবছ, তা সম্ভবত কিছুই মিলবেই না। এছাড়া গাজীপুর থেকে রকিব লিখেছে, ‘আবিদা আপু, কম কথা বলে কেন?’ কই না তো, দু’জনই তো সমান তালে কথা বলছেন। এছাড়া টেক্সট করেছে আশিক, কল্যাণী, সুজন, মৃদুল, তাপসী আরও অনেকে, অনেকে। প্রিয় বন্ধুরা অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে ফোনকল পর্ব থাকার কারণে এসএমএস পড়া থেকে আমরা বিরত থাকব। আমরা এখন চলে যাব সেই প্রেমের গল্পে। আপনারা সাথেই থাকুন।

—কৌশিক যে কথাটা বলল, সেই বিতর্কে ফিলিংসের ব্যাপারে। আমি বলব, আমারও সেইরকম ফিলিং হয়েছিল। এটাকে ব্যাখ্যা করে আমি বোঝাতে পারব না। এক কথায় সেরা আনন্দ, আমি এই আনন্দের ছোঁয়া প্রথম পাই যখনরিলেটিভিটিনিয়ে আমার প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিয়েছিল। মনের ভেতর সেটা এক সুখের দোলা দেয়।

—আসলে এটা যেন আমাদের জীবনে নতুন এক অনুভূতির আবিষ্কার। আজকে যখন আমরা বিবাহিত জীবন যাপন করছি, তখন দুজনই তুলনামূলকভাবে উপলব্ধি করতে পারছি, সে মুহূর্তটা মানব জীবনের সবচেয়ে মধুর যে নৈকট্য বোঝায়, ঠিক সেরকমই ছিল। সোজা কথায়, নর-নারীর সংগমসুখের মতো, অথচ ওটা ছিল আমাদের মধ্যে কথোপকথন বিতর্ক!

—প্রিয় বন্ধুরা, এখানে আপনাদের অনুরোধ করব, পুরো বিষয়টা মনোযোগ সহকারে শোনবেন। কারণ, এখান থেকেই শুরু হচ্ছে আজকের অনুষ্ঠানের বৈচিত্রময় পার্ট। যা মিস করলে পুরো অনুষ্ঠানই বুঝতে অসুবিধা হবে।

—তো আবিদার প্রতি একটা ভালোলাগা তৈরি হয়ে যায়। ওর পদার্থবিজ্ঞানের প্রতি আকর্ষণ থাকার ফলে ওর প্রতি আমারও আকর্ষণ বেড়ে গেল, অন্যদিকে তড়িৎবিজ্ঞান নিয়ে আমারও আগ্রহ ছিল। এই আগ্রহ আমাদের এক সুঁতোয় গেঁথে দেয়। আমার প্রেমের সবটা জুড়ে ছিল বিজ্ঞান। আর বিজ্ঞানকে কাছে পাবার ক্ষেত্রে পরম বন্ধু বা সঙ্গী কিংবা সহধর্মী হিসেবে পেলাম ওকে।

—আমি তো ছোটবেলা থেকেই পদার্থবিজ্ঞান ভীষণ পছন্দ করতাম। দেখলাম যে কৌশিকের মধ্যেও তড়িৎবিজ্ঞানের প্রতি অনেক আগ্রহ। ফলিত পদার্থবিজ্ঞান তড়িৎ প্রকৌশল বিজ্ঞান পরস্পরের মাঝে তো বেশ ভালো একটি সম্পর্ক আছে। আর দুজনের মধ্যে কেমন যেন অনেক মিল পেয়ে গেলাম। খুব দ্রুত আমরা বন্ধু হলাম। আর আমাদের যোগাযোগের ক্ষেত্রটা লাইব্রেরি, ল্যাবরেটরি, কফিশপ আর ল্যাবরেটরির ছাদ বাগান। আর কখন যে আমাদের মধ্যে প্রেম শুরু হল সেটা সঠিকভাবে বলতে পারব না।

—কৌশিক ভাই, আপনার কাছে জানতে চাইব, প্রোপোজটা কে আগে করেছিল?

(হেসে) আমরা কেউ কাউকে প্রোপোজ করিনি। ফিল করে নিয়েছি। একজাম্পল দিচ্ছি, কোনোদিন যদি আমাদের মধ্যে দেখাসাক্ষাতে গ্যাপ পড়ত, আমরা দুজনই অচল হয়ে যেতাম। অচল হয়ে যেতাম বলতে, আমার রিসার্চের ক্ষেত্রে সবই কেমন এলোমেলো হয়ে যেত, যেন ওর সাপোর্ট ছাড়া কিছু পসিবল না। রেফারেন্স বুকগুলোর ঠিকঠিকানা থাকত না। তখন বুঝতাম আমার সাধনার পেছনে ওর সাপোর্ট কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

—কৌশিক যখন লাইব্রেরিতে আসত না, তখন আমিও যথেষ্ট বিড়ম্বনায় পড়তাম। একটা ইজি অ্যাসাইমেন্ট রেডি করব, তাও করতে পারছিলাম না। যেন সবকিছু গুলিয়ে ফেলছি, লিখতে বা পড়তেও অসুবিধা হচ্ছে। কারণ প্রয়োজনীয় সায়েন্টিফিক যত প্রশ্ন সবই তো ওকে করতাম, আর ইজিতে অ্যানসারও পেতাম। আর ওর না আসা মানে আমি, একা-একা কোশ্চেন করছি, কিন্তু অ্যানসার পাচ্ছি না। হয়তো হঠাৎ কাউকে কৌশিক বলে ডাকতে শুরু করছি, জুল বা কুলম্বের সূত্রটা নিয়ে কোশ্চেন করে বসলাম। একদিন অন্য ফ্যাকাল্টির এক ছেলে তো হতভম্ব হয়ে গেল। আসলে এটা এক পরম অভ্যাসে পরিণত করেছিল তখন।

—ল্যাবরেটরিতে সারাদিন আমরা একসাথেই থাকতাম। কিন্তু একটা সময় মনে হচ্ছিল, দিন শেষে আবিদার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়াটা, বাকি সময়গুলোতে আমার কাজে হিজিবিজি অবস্থা সৃষ্টি করছে। মানে বাসায় থেকে একা যেন কিছুই করতে পারছি না। আমরা পারস্পরিক নির্ভরশীল সেটা অনুভব করতে থাকি।

—আমি বাসায়ও কৌশিক কৌশিক বলে ডাকতে থাকি... বাবা ব্যাপারটা আমলে নিলেন। তখন আমরাও বুঝলাম আমাদের একসাথে থাকা উচিত। আর এজন্য সোসাইটি কন্ডিশন তো পূরণ করতেই হবে, আমার বাবা উদ্যোগী হয়ে আমাদের বিয়ে দিলেন, আর সেটাও হঠাৎ একদিন।

—ফুলশয্যার রাতে সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্তটা শুনতে চাই আমরা।

(হেসে) আমরা সে রাতে ঘুমাইনি। ওই রাতে প্রথমে আমরা কারশফের থিয়োরি নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। পরে আমার ছোট্ট ল্যাবরেটরিতে আবিদা আমাকে খুব সহজভাবে প্রমাণ করে দেখিয়েছিল, একটা সার্কিটের কোনো বিন্দুতে আগত নির্গত কারেন্ট কীভাবে সমান, মানে ওই কারেন্টের বীজগাণিতিক যোগফল সমান। এতে কারশফের থিয়োরি নিয়ে আমার সন্দেহের ঘোর কেটে যায়। আর এটাই ছিল আমার ফুলশয্যার রাতের পরম সুখ, পরম সংগম।

—বিয়ের পর থেকে একটি রাতও আমি কৌশিককে ছাড়া কাটাইনি। আর প্রতিটি রাত ছিল সুখকর। নতুন নতুন উদ্ভবে আনন্দ উদ্‌যাপনের মতো।

—এখানে পর্যায়ে এসে আপনাদের একটা জটিল প্রশ্নের মুখোমুখি করতে চাই। আমি যতদূর জেনেছি সে প্রসঙ্গ থেকেই প্রশ্নটা মাথায় এল। আমার মনে হয় প্রশ্নটা আমার মতো শ্রোতাদের মনেও ঘুরপাক খাচ্ছে। আপনাদের শারীরিক সম্পর্ক কেন হয় না? বা কেন করেন না। বিষয়টা কি ক্লিয়ার করে জানাবেন?

—আমাদের যে শারীরিক সম্পর্ক হয়নি তা নয়। কারণ, আবিদার মা-বাবা যখন নাতির জন্য আন্দোলন-আবদার করে বসল। তখন আমরা সন্তান নেবার উদ্দেশ্যে প্রস্তুতি নিয়ে মিলিত হই। সেটা নিঃসন্দেহে ভাল একটি মুহূর্ত ছিল। তবে আমার কাছে সময়টা তুলনামূলকভাবে অন্য সময়ের চেয়ে কম সুখকর ছিল।

—কৌশিকের কথার সাথে আমিও একমত, আমাদের কয়েকবারের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, ওটার জন্য পূর্বপ্রস্তুতি পরবর্তী অবসাদ দূর করার জন্য যথেষ্ট সময় নষ্ট করতে হয়। সময় নষ্টটা আমার চোখে বরাবরই ক্ষতিকর। তবে আমি মাতৃত্ব অনুভূতির আনন্দ অনুভব করেছি বেশ।

(হেসে) বাবা হওয়াটাও আমার সুখের ছিল। অবশ্য আমরা প্রথমদিকে বেশ সময় ব্যয় করতাম সন্তানের পেছনে। একটা সময় সে বড় হয়ে উঠল, আর আমাদেরও কাজে মনোযোগী হবার সুযোগ মিলল। ছেলেটা এখন বিদেশে পড়াশোনা করছে। ওকে নিয়ে আমরা খুবই আশাবাদী।

—আবিদা আপু, প্রশ্নটা আমি আবারও করতে চাই, সাধারণত দাম্পত্যজীবনে স্বামী-স্ত্রী ফিজিক্যাল রিলেশন করবে এটাই স্বাভাবিক, কিন্তু আপনারা এখানে আনকমন। এটার কী ব্যাখ্যা আপনাদের কাছে?

—দেখুন, সেক্স মানে তো আকর্ষণ। স্বামী-স্ত্রী মধ্যকার সম্পর্ক সাঁকো বজায় রাখতে এটার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আর সাধারণভাবে এটা বেঁচে থাকার জন্য জীবনের সেরা একটি বিনোদন। এর উদ্দেশ্য কেবল সন্তান জন্মদান নয়। বিনোদন বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মানুষ সাধারণত সেরা বিনোদনটিকে প্রাধান্য দেয়। কিন্তু যখন আমাদের উপলব্ধি মগজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে দুজনের পাশাপাশি অবস্থান, একসাথে গবেষণা, চর্চা ল্যাবরেটরিতে কাজ করার ক্ষেত্রকে, তখন এটিই আমাদের সেরা বিনোদনে পরিণত হয়েছে। আর ফিজিক্যাল সেক্স এখানে গৌণ হয়ে পড়েছে। কৌশিক কী বলো?

—হ্যাঁ আবিদা, তুমি ঠিকই বলেছ। আসলে সৌর এটাই আমাদের লাইফে রিয়েল সেক্স বলা চলে। এটাই আমাদের দুজনের মধ্যে আকর্ষণ সাঁকো। আর এটা ছাড়া আমার আবিদার স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকা সম্ভবত সম্ভব নয়। এই বিজ্ঞানচর্চার প্রতি এই ঝোঁক যদি না থাকত, তখন হয়তো ফিজিক্যাল সেক্সের উপর আমরা নির্ভরশীল থাকতাম। জানি না, সিওর (মুচকি হাসি) সেটা ভিন্ন কিছু, যা বাস্তব তাই অকপটে বলছি।

—আবিদা আপু, আপনার কাছে প্রশ্ন কৌশিক ভাইকে ইমার্জেন্সি কোনো কারণে যদি দূরে কোথাও গিয়ে থাকতে হয়, আপনি কি অ্যাকসেপ্ট করবেন বিষয়টাকে?

—এটা নির্ভর করছে ইমার্জেন্সি কারণের ধরনের উপর। আর কৌশিক তো আমার মতামত না নিয়ে কোথাও যাবেও না। ইমার্জেন্সি কারণটা যদি কোনো ট্রেইনিং, রিসার্চ বা থিসিসের জন্য হয় সেটাকে আমি আনন্দের সাথে অ্যালাও করব। আর এটা অলরেডি করেছিও পিএইচডি করার সময় লন্ডনে আমার নয় মাস আগে চলে গিয়েছিল। ভিসা জটিলতা কাটিয়ে তারপর আমি ওখানে গিয়ে পৌঁছাই এটা তো স্বজ্ঞানে মেনে নিয়েছি, কারণ এটাও আমার জন্য সুখেরই ছিল।

—আচ্ছা আপনারা বিজ্ঞানের বাইরে এসে কি কখনও দুজনকে ফিল করেন না?

—আসলে সত্যি বলতে কৌশিক আমি মনে হয় সায়েন্স থেকে একেবারে অবিচ্ছিন্ন, আর আমাদের প্রেমও সায়েন্স থেকে অবিচ্ছিন্ন ফলে কখনও সায়েন্সকে বাদ দিয়ে প্রেম বা প্রেমকে বাদ দিয়ে শুধু সায়েন্স নিয়ে রিলেশনশিপ কল্পনা করতে পারি না প্রেম বিজ্ঞান এখানে রেললাইনের মতো সমান্তরাল, আমাদের চলতে হলে দুটো লাইনকে একসাথে নিয়েই চলতে হবে এভাবেই তো চলছি... হাহা।

—আপনাদের মধ্যে কখনও ঝগড়া বা দ্বিমত হয় না?

—হ্যাঁ, প্রচুর হয় অনেক বিতর্ক হয় তোমার রেডিয়ো স্টেশনে আসার আগেও আবিদার সাথে, কুলম্বের চার্জ সংক্রান্ত একটা থিয়োরি নিয়ে তর্ক হল। ওটা এমন, দুইটি আলাদা বিন্দু চার্জের মধ্যে যে আকর্ষণ বা বিকর্ষণ বল, চার্জ দুইটির পরিমাণের গুণফলের সমানুপাতিক এবং দূরত্বের বর্গের ব্যাস্তানুপাতিক ধরো, চার্জ দুটো কিউ-ওয়ান কিউ-টু আর দূরত্ব ডি এখানে...

—হয়েছে কৌশিক তোমাকে এখন পরো সূত্র ব্যাখ্যা করতে হবে না তুমি কুলম্বের সূত্রের যে ত্রুটি দেখিয়েছ ওটা সম্পূর্ণ ভুল আমি তোমাকে আজ রাতেই এটা প্রমাণ করে দেখাব।

—শ্রোতাবন্ধুরা, বিজ্ঞানের কিছু দুর্বোধ্য বিষয় আলোচনায় চলে এলেও আমরা গভীরে যাব না কারণ, আমরা প্রেমের গল্প শুনব। কিন্তু প্রেমের যোগসূত্র যখন সায়েন্সকে নিয়ে, তাই প্রসঙ্গক্রমে সায়েন্সও আসবে তবে ততটা নয়, যতটা ভয় ধরিয়ে দেয়

(দু’জনেই উচ্চস্বরে) হাহাহা...

—শ্রোতাবন্ধুরা জৈবিকতার এই অচেনা প্রসঙ্গ আলোচিত হবার কারণে, খুব ইজিতে অ্যাডাল্ট ইস্যু সামনে চলে আসছে সবার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি, পজিটিভলি নেবার জন্য কৌশিক ভাই আবিদা আপু, আপনাদের কাছে আরও একটি প্রশ্ন, সর্বশেষ কবে আপনাদের শারীরিক সম্পর্ক হয়েছিল?

—লাস্ট কবে হয়েছিল, সেই দিন-তারিখ মনে নেই, আবিদার মনে আছে কিনা জানি না এই প্রসঙ্গে একবার কিছু একটা বলা হয়েছে তবুও বলছি, মাত্র কয়েকবারই আমরা মিলিত হয়েছিলাম আর সেটা একটা সন্তান জন্ম দেবার উদ্দেশ্যে কারণ আমাদের দুজনের বাবা-মা চাচ্ছিল নাতির মুখ দেখতে আর আমরাও ভাবলাম হোক না পরবর্তী প্রজন্মের কারওর আগমন এতে শ্বশুর-শাশুড়ি, বাবা-মাকে খুশি করার মধ্য দিয়ে আমরাও সুখী হব। এখানে শারীরিক সম্পর্কের চেয়ে আমাদের কাছে মানসিক সম্পর্ক বেশি সুখকর এটাকে মস্তিষ্কের সেক্স বলতে পারো, মগজের সাথে মগজের সংগম, যা আমাদের সর্বক্ষণ সুখ দেয় আনন্দ দেয়, যা আমাদের কখনও ক্লান্ত করে না মানুষ তো সব সময়ই বেশি আনন্দের দিকে ধাবিত হয় আর এজন্যই হয়তো আমাদের কাছে শারীরিক সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ হয় না যেটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা সাইকোলজিক্যাল সেক্স...

—আমাদের লাস্ট ফিজিক্যাল সেক্সের ডেট আমার ডায়েরিতে লেখা আছে

—যখন অনেকদিন গবেষণা করে আপনাদের কাজে একটা সাকসেস আসে, তখন ফিলিংস কেমন হয়?

—কৌশিক আমি যখন এক-একটা রিসার্চ পেপার কমপ্লিট করি, তখন আমরা উত্তরোত্তর বেশি থেকে বেশি আনন্দ পাই যা মনে হয় জীবনের শ্রেষ্ঠ পাওয়া এই আনন্দটা সংগমের পরম উত্তেজনার মুহূর্তের মতো, অর্গাজম হওয়ার মতো সুখ দেয় যা আমাদের ব্রেইনে ঘটে এটাকে বায়োলজি বা সাইকোলজি কীভাবে সংজ্ঞায়িত করবে জানি না, ব্যাপারে আমার জ্ঞান নেই বললেই চলে, তড়িৎ প্রকৌশল বিজ্ঞান নিয়েই আমার যত কারসাজি কিন্তু মজার বিষয় হল দীর্ঘদিন পরিশ্রম করে যখন একটা সাফল্য আসে আর সাফল্যের সুখ সুদীর্ঘকালের জন্য স্থায়ী হয়, ফিজিক্যাল অর্গাজমের মতো এখানে আমাদের ক্লান্ত, কিংবা বিচ্ছিন্ন করে দেয় না, বরং সুখ অনুভূতিকে কাজের ভেতর ধরে রাখতে সাহায্য করে, আর-একটা সাকসেসের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়

—সাধারণত আপনাদের সারাদিন কীভাবে কাটে?

—সকালে একসাথে পার্কে গিয়ে জগিং করি আবিদা গাড়ি চালিয়ে আমাকে কর্মস্থলে পৌঁছে দেয় তারপর সে পরমাণু কেন্দ্রে চলে যায় ফেরার পথে একসাথে বা আমি একাই রিকশায় বাসায় আসি বিকেলে সায়েন্স জার্নাল পড়া, ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ করা, গল্প করা, গান শোনা, ফিলোজফি পড়া এভাবে কাটে আবিদা তো ভালো পিয়ানো বাজাতে পারে, এটাও আনন্দের খোরাক ছুটির দিনে সাঁতার কাটা বা দূরে কোথাও ঘুরতে যাওয়া এছাড়া নিয়মিত ধর্মীয় প্রার্থনা করা, মেডিটেশন তো আছেই

—শ্রোতাবন্ধুরা, আমরা বিজ্ঞানকে আনন্দ রসহীন বলি, অথচ বিজ্ঞানীদের জীবনযাত্রা কী চমৎকার! আচ্ছা, কৌশিক ভাই, কখনও কি মনে হয়, অনেক বিজ্ঞান নিয়ে কাজ করেছেন, এবার গবেষণা থেকে অবসর নেবার ইচ্ছে কাজ করছে?

—না, এটা কখনওই মনে হয় না মনে হয় প্রতিনিয়ত শিখছি, নতুন কিছুর সন্ধান পাচ্ছি আরও রিসার্চ করার তাড়া অনুভব করি মৃত্যু অবধি এটা চলবে, তবু সাধ মিটবে না...

—আবিদা আপু, জীবনে যদি কৌশিক ভাইয়ের চেয়ে সেরা কেউ আসত তাহলে কী করতেন? কিংবা আজ এর চেয়ে সেরা কেউ যদি আসে কী করবেন?

—এটা সম্ভাবনাময় প্রশ্ন এটার সঠিক অ্যানসার দেওয়া পসিবল না, আর প্রয়োজনীয়ও না বটে তবে হয়তো অন্য কেউ আসতে পারত আরও বিখ্যাত বিজ্ঞানী বা বিজ্ঞানপ্রেমী তবে বিজ্ঞানকে ভালবেসে যে প্রেম দিয়ে আমাদের পথ চলা শুরু সেটা পেতাম না আর আরও সেরা কেউ যদি আসে, তবুও কৌশিককে ছেড়ে যেতে পারব না, কারণ জীবনের ওইসব স্মৃতির আকরিক রেখে কোথাও যাওয়া সম্ভব না সেরার মানদণ্ডে আমার কাছে কৌশিকই সেরা।

—প্রিয় বন্ধুরা বুঝতেই পারছেন, তাঁদের বন্ধন কত সুদৃঢ় এখন আমরা চলে যাব, ফোন কল পর্বে যারা ফোনকলের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন তাদের বলছি, প্রথমে নাম কোথা থেকে যুক্ত হয়েছেন তা বলে, অতিথিকে খুব শর্ট করে আপনার প্রশ্ন বা মতামত জানাবেন প্রথম কলে কে আছেন?

—আমি সিলেট থেকে, আতাহার বলছি সৌর ভাই, একটা আনকমন বিষয় আজ জানলাম শ্রদ্ধা আজকের অতিথিদের প্রোগ্রামটি খুবই ভালো হয়েছে

—ধন্যবাদ আতাহার ভাই পরের কলে কে আছেন?

—মৃণাল চক্রবর্তী, যশোর থেকে বলছি পুরো অনুষ্ঠানটি শুনে বুঝলাম কৌশিক সাহেব একজন নিষ্কাম ব্যক্তি, সোজা বাংলায় যাকে বলে ধ্বজভঙ্গ এতে সন্দেহ নেই... ব্যস, কারণ হইতেছে...

—দুঃখিত আপত্তিকর শব্দচয়ন কণ্ঠ আচরণের জন্য আপনার কলটি কাটা হল

(হেসে) মানুষের এই আচরণ নতুন নয় শ্রোতাদের বলছি, বলতে পারেন আমি আপনাদের মতো কামুক নই, প্রচলিত কামপন্থার প্রতি অনীহা রয়েছে আমার কামের সবটুকু শৌর্য, বীর্য বিজ্ঞানকে ঢেলে দিয়েছি, আমার সৌভাগ্য বলব, আমি ঠিক আমার মতোই একজন জীবনসঙ্গী পেয়েছি আমি গর্বিত একজন মেধাবী সন্তানের পিতা হিসেবে একদিন দেশবাসী আমার সন্তানের আলোতেও আলোকিত হবে

—পরবর্তী ফোনকলে কে আছেন?

—আমি সুপ্রিয়া কলকাতা থেকে এই বিজ্ঞানী দম্পতিকে অনেক অনেক শ্রদ্ধা ভালবাসা আমি আজকের অনুষ্ঠানে সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি

—ধন্যবাদ সুপ্রিয়া নেক্সট কল...

—আমি জয়পুরহাট থেকে শাফি বলছি, আমি ব্যক্তিগত জীবনে খুবই কামুক তো আমার প্রশ্ন এই কামকে অ্যাভয়েড করে সুখ পান কী করে?

—প্রিয় শ্রোতা আসলে, আসলে সুখ বিষয়টা যৌনমিলনে নয়, সুখ আমাদের মগজে মনে আপনি যখন কামে লিপ্ত হোন তখন দেহের স্নায়ুতন্ত্র যোগাযোগের মাধ্যমে আপনার মগজে সুখের সিগন্যাল দেয়, আর সিগন্যাল পেয়েই আপনি সুখ অনুভব করেন আমার আবিদার সুখের এই সিগন্যাল আসে তখনই, যখন আমরা সায়েন্টিফিক থিয়োরি নিয়ে কাজ করি এটাই এখানে আমাদের কাম এটাই সাধনা এই সাধনার জন্য আমরাও ভীষণ রকম কামুক তাই তো বলি, সুখ ওখানে নয়, সুখ এখানে, যেখানে হৃদয়ের আনাগোনা

—শাফি, আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন এখন আমাদের শেষ কলটি নেব কে আছেন?

—আমি হৃদয় আহসান, ঢাকা থেকে বলছি সৌর ভাই বিজ্ঞানী দম্পতিকে ভালবাসা, সুন্দর একটি অনুষ্ঠান উপহার দেবার জন্য আমি সবার নিজস্ব সেক্সুয়াল আইডেনটিটিকে শ্রদ্ধা করি

—হৃদয় আহসান, আপনি আপনার প্রশ্নটি করুন কিংবা মতামত, হাতে আমাদের সময় খুবই অল্প

—ঠিক আছে সৌর ভাই কৌশিক স্যারের কাছে প্রশ্ন, যাঁরা মহান মনীষী তাঁরা নিজেদেরকে কাম থেকে দূরে রাখতে চাইত মহাত্মা গান্ধিজি ব্রহ্মচর্য করতেন মুনি, ঋষি, সন্ন্যাসীরা কামকে এড়িয়ে ধ্যানে ডুবে থাকতেন আপনার সাথে সেরকম মিল পাচ্ছি ব্যাপারে আপনি নিজেকে কী বলবেন?

—ধন্যবাদ হৃদয় আহসান ভাই আপনার কণ্ঠটা খুবই সুন্দর এখন যাচ্ছি কৌশিক ভাইয়ের কাছে

—ধন্যবাদ শ্রোতাকে দারুণ একটি প্রশ্ন করেছেন প্রশ্নটা আমার মনেও এসেছিল এবং দীর্ঘদিন ধরে উত্তর খুঁজেছি ভাবতাম, যদি আবিদাকে না পেতাম, তবে কি আমি মুনিঋষির মতো একা থাকতাম? একা থেকে বিজ্ঞান চর্চা করতাম? এই প্রশ্নের উত্তর হল, না আমি প্রেমিক, মুনিঋষি নই তাঁদের আর আমার মধ্যে অনেক পার্থক্য আমি একাকিত্ব পছন্দ করি না আমি বিজ্ঞান সাধক, প্রেমিকার প্রেম পেয়েছি বলেই সাধক হতে পেরেছি এখানেই আমার ঋষি, সন্ন্যাসীদের মধ্যে পার্থক্য

—প্রিয় শ্রোতা, আজকের মতো আমরাপ্রেমের গল্পঅনুষ্ঠানের একেবারে শেষপ্রান্তে চলে এসেছি সবার সুস্থতা কামনা করে এখানেই বিদায় নিচ্ছি ধন্যবাদ কৌশিক ভাই আবিদা আপু, আপনাদের আগামীদিনের সব রিসার্চ সফল হোক পরবর্তীতে আমার উপস্থাপনায়বিজ্ঞানের আবিষ্কারঅনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানোর ইচ্ছে থাকল বিদায় মুহূর্তে প্রিয় বন্ধুরা শুনতে থাকুন, আমাদের প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সেই সেরা গানটি, খেলিছো এই বিশ্ব লয়ে বিরাট শিশু আনমনে...

1 comment: