পরিনাম
দুপুর ভাতের সঙ্গে ক্লান্তি মিশিয়ে খেয়ে
ঘুমের কবিতায় শুয়ে পড়ে বাঙালি আস্ত
একটি বই হয়ে যায়, কিংবা ভালোবাসে
ঘুম রোডের দইবড়া
সরলরেখায় একটি ইদুর কাটতে থাকে
জীবন বীমার অংক
ঢেকুর বিদ্যায় উগড়ে দিয়ে গুপ্তফুল এবঙ
প্রাসঙ্গিক সমস্ত সৌরভ চারুকলা,
বাতি নিভে যাওয়া রাতের জিকিরে উজ্জ্বল
বাঙালির ঠোঁটে, — কাঠ-লাকড়ির আগুন
কিংবা সাড়ে তিন হাত জীবাশ্মের স্টোর।
যাদুকর
আমার ঘরের সিলিংয়ে একটি ফ্যান।
ঠিক পনের বছর আগেও এই ফ্যানটিই
ছিলো, পুরানো হয়নি একদমই, — যেমনঃ
বদলায়নি মায়ের আঁচলে বৃক্ষছায়াবালিশ।
আমার গরম লাগে, ফ্যানটি ঘুরে — সাইবেরিয়া,
আমার শীত লাগে, কাঁথা গায়ে,
ফ্যানটি ঘুরে, — উষ্ণ কুসুম জলের বাতাস।
তাকালেই দ্যাখি, — হাসছি আমি ঘুরতে ঘুরতে, বেজেই যাচ্ছে ঢং ঢং বেল দফতরি মামার হাতে।
ফ্যানটি আমার আশ্চর্য যাদুকর, তাকালেই আমি শৈশবের মাছ শিকারী বালক হয়ে যাই!
কাফফারা
দুধ সিঁড়ি পাড় হয়ে শিশু বাহাদুর হাতে তুলে লয় গণেশ দেবতার লাড্ডু,
খিলখিল কোরে হাসে, পাশে বোসে কাঁদে মাটির ইশ্বর, কয়, — আমাক দাও তোর ওই সরপুরিয়া,
শাদা ভাত মার্কা হাসি
মানুষ!
কী জিনিস যে বানাইলাম মাইরি!
খালি ডিপ্রেসড হইয়া যাই, কাঁদলেই বৃষ্টি ভাঙে
হাসতে চাই ইচিংবিচিং
হাসতে চাই ভুল ভুইলা।
ফেনা
সাবানের কচি ফেনা একটার সাথে আরেকটায় সেক্স করে
দুয়েকটা শরীরের পশম ওগো লাগে প্রেম জমাইয়া ঝইরা পড়ে ট্যাবে, পিচ্ছিল ফ্লোরে
ময়লা কাইটা কাইটা সাঁতরায় বন জঙ্গল,
টাস টাস কইরে ফুইট্টা মরে একে একে, — শোনা যায়না, দ্যাখা যায়
গোসল করতে গ্যালে, সাবান ঘসলেই শরীর ভর্তি বাইড়া ওঠে হাওয়াই মিঠাই।
মাইগ্রেন
মাথা ব্যথার মধ্যে নিজেরে লেইখা চিঠি দিই।
এমন অনেক চিঠি আমি আতরজানরেও দিসি,
হঠাৎ উল্টা বাতাস লাইগা কী যেন কোন ব্যামো
হইলো, জান আমার আতর হইয়া ঘুমায়া আছে
মাথার মধ্যে ঝিঁঝি ডাকে, লাল ফলের রাগ
আমারে রস কইরা বান্দায়া রাখে পৃষ্ঠা পৃষ্ঠা...
জিরাফ
জোড়া শালিখ, ডাকিস না আর,
ঘুমের ভিতর কুমির কুমির ভাষা
ডুবো চরে আটকে থাকে মাথা
বিষম খেয়ে ঘর পালালো, কইয়ের
কাটা করলো সেলাই ফোঁড়ে
জোড়ে শালিখ, ডাকিস না আর,
চেনা পথে ফিরবে না তো ঋতু
ঘাস বাগানে উঠছে শিশির চাঁদ
ডাকলে তোরা শিশির বনে যা
হাঁটবে জুতো পা খুইয়ে, দুয়ার
দিয়ে রাখ, ঘুমের মানুষ জিরাফ
হয়ে দেখে, —কুমির ভাষার স্বপ্ন
জেগে থাক।
কপাল পাঠের আয়না
আয়না প্রথমে দেখে, তারপর দেখায়।
আমার ঘরের আয়নার চোখে ইদানীং বোধহয় ছানি পড়েছে।ভাবছি আমার ডাক্তার বন্ধু অমিতাভকে একবার দেখাবো।সমস্যা প্রকট নয় যদিও, তবু আমি তাকালে ভুল করে বোধহয় কপালটাকেই দেখেনা
কী আছে কপালে?
খুব বড়সড় নয়, ডালভাত ব্রান্ডের ইঞ্চি চারেক কপাল।খুশি থাকলে কবিতা পড়ি, দুঃখ আমারে
কবিতা লেখায় — বিশেষ বলতে এতটুকুই
শুধু রাতের বেলায় আয়না আমার পুরোটা দেখে।
কপাল বরাবর নিরক্ষর এক বটগাছ, আমি মানুষের সামনে তাদের কপালরোদ পড়ছি, মানুষ আমার কপালে শুকাতে দিচ্ছে শীতের জামা।
No comments:
Post a Comment