বাক্‌ ১৪৫ ।। সুদীপ চট্টোপাধ্যায়

 

অনঙ্গদানা

 

তৃতীয় আঁধার না-মুদ্রায় তোমার বিভঙ্গ দেখি

দেখি উপমা সহিত তুমি তুলে আনছ লিপি

 

এভাবে দেখার মনোলগ হল--হল ততদূরই উড়াল

যেখানে একপথ চোখ বসে আছে

বসে আছে চোখের বারান্দা

 

যাব না সেই হেতু যাব-না এসেছে কাছে

আমি গলা বাড়িয়ে দিই

অমনি ধারালো জিরাফ নামে

 

চোখ সেলাই করে পুনরায় ফিরে আসি

একান্ত গানের ভেতর

সুর প'ড়ে ভেঙ্গে যায়

দেখি অন্তরাশাসিত শরীর হচ্ছে

 

ধরা পড়ে যাই--

 

পরের জন্মে পুনরায় তোমার জবানবন্দি হয়ে ফিরে আসি

 

শরীর রিপিট হচ্ছে আর গোড়ালি অব্দি

মাথা ডুবিয়ে বসে আছে আলো

 

যাওয়ার কোনও নতুন নেই, অথচ রাস্তায়, প্রবল ট্রাফিকের ভেতর কীভাবে উঠে এল রঙের ঢেউ

নিঃশব্দে খসে পড়ল তোমার বাঁ-হাতের মধ্যমা

ভাসতে ভাসতে উঠে এল পুরোনো পাড়ায়

 

কিছুতেই গান হবে না জেনে পুষে রাখলে কয়েকটা লিরিক

 

আর রঙিন কাচের ভেতর লুকিয়ে রাখলে ব্যবহৃত জ্যোৎস্না

 

 

পা থেকে কেবলই উঠে আসে পাখি, উঠে আসে তেরোটি পার্বণ

আকণ্ঠ নেশার মত একটা বাড়ি

তার একাধিক দরজা দিয়ে তুমি বেরিয়ে আসছ

সমবেত শরীর নিয়ে

সমবেত শরীর থেকে বেরিয়ে আসছে পার্বণের ধূপ-ধোঁয়া

আর পা থেকে কেবলই পাখি

এভাবে বেড়ে যায় দেহের সীমানা

ভীষণ উষ্ণ হয়ে ওঠে গাছের শরীর,  জ্বর আসে

 

 

পরবর্তী আবহাওয়ার কাছে কোনও খবর থাকে না

কতরকম ভাবে তুমি বেরোতে চেয়েছিলে

একটা টলমলে বাড়ি থেকে

 

 

আরও একবার নির্দিষ্ট ঘড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছো তুমি

 

কাঁটা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে আরও একবার লাফিয়ে পড়লে উত্তপ্ত বালির ওপর

তোমার মাথার ওপর তিনরঙের সমুদ্র

তার ছায়ার নীচে ম্যামথের গ্রাম

 

টুকিটাকি আবহাওয়া কুড়িয়ে নিয়ে

বসিয়ে দিলে মেধাবী অরণ্যের গায়ে

 

আরও একবার সমস্ত-কিছুর পাশে

এসে দাঁড়াল কোনও-কিছু-নয়

আরও একবার সমস্ত সংখ্যা থেকে

ছিন্ন হল উলঙ্গ সময়

 

ঘুমের মধ্যে জ্যোৎস্না এলে

দেখা যায় হারানো বন্ধুর মুখ

 

ট্রাম ও বাসের সংসার থেকে বহুদূরে পড়ে থাকে

আমাদের ব্যক্তিগত চোখ

তাকে ধুয়ে মুছে কারা যেন রেখে দেয়

কোনও পাহাড়িয়া গ্রামে, গাছের কোটরে

 

তুমুল বর্ষার দিনে, সে চার হাতেপায়ে

গাছ থেকে বেরিয়ে, পাহাড়ে পাহাড়ে

হারানো বন্ধুর মুখ ফেরি করে

 

 

 

3 comments: